বৈদেশিক লেনদেনে US Dollar সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কারেন্সি। আবার ডলার হল প্রধান রিজার্ভ কারেন্সি। পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে ডলার প্রাধান্য পায়। ইতিমধ্যে চীন আমেরিকাকে হটিয়ে অর্থনীতিতে প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে কিন্তু চীনের বিশাল অর্থনীতি মজুদের সিংহ ভাগ হল ডলার। নিম্নের পরিসংখ্যানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, চীনের অর্থনীতি অবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি সমান গতিতে ডলারের মজুদ বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ২০০৭-১৪ এই ৮ বছরে ৩ হাজার বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ বৃদ্ধি পেল।
![]() |
চীনের US Dollar মজুদের পরিমাণ |
আমরা সকলেই অবগত ডলার এখন ICU তে আছে এবং কফিনে রেখে যে কোণ দিন দাফন সম্পন্ন করা হবে। চীন সেটি বুঝতে পেরে ২০১৪ সালের পর থেকে ডলার মজুদের পরিমাণ কমাচ্ছে। ২০১৪-১৬ এই দুই বছরে ১ হাজার বিলিয়ান ডলার রিজার্ভ কমিয়ে এনেছে এবং ডলারের পরিবর্তে রিজার্ভ হিসেবে স্বর্ণেকে প্রাধান্য দিচ্ছে। গত এক বছরে চীনের গোল্ড রিজার্ভ আকস্মিক হাড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।
![]() |
চীনের স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ |
২০০০ সাল থেকে তারা ঘোষণা দিয়ে স্বর্ণের মজুদ বাড়াতো, ২০০৩ ও ২০০৯ সালে এভাবে স্বর্ণের সংরক্ষণের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছিল। ২০১০ থেকে ২০১৫ অর্থাৎ এই ৫ বছরে সংরক্ষণের পরিমাণে কোণ তারতম্য নেই। আবার ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে আকস্মিক ভাবে স্বর্ণের মজুদ ১ হাজার টন থেকে ১৮শ টনে পৌঁছে গেল। এক বছরে ৮০০ টনের বৃদ্ধি কোন স্বাভাবিক ঘটনা নয় আবার একই সময়ে ডলারে মজুদ কমানো হচ্ছে। অন্যদিকে রাশিয়ার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ স্বাভাবিক গতিতেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
![]() |
রাশিয়ার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ |
নিম্নের গ্রাফে যথাক্রমে নিচ থেকে উপরের দিকে ভারত, টার্কি, রাশিয়া এবং চীনের বাৎসরিক স্বর্ণের চাহিদার পরিমাণ দেখান হয়েছে। ভারত ও টার্কিতে স্বর্ণের চাহিদা মানে গিফট এবং জুয়েলারির চাহিদা কিন্তু রাশিয়া এবং চীনে স্বর্ণের চাহিদা জুয়েলারির জন্য নয় বরং স্বর্ণ সংরক্ষণের চাহিদা।
![]() |
ইন্ডিয়া, টার্কি, রাশিয়া ও চীনের স্বর্ণের চাহিদা |
গ্রাফে স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে চীনের স্বর্ণের চাহিদা আকস্মিক ভাবে বেড়েছে। ২০১০ সালে ১২ হাজার টন থেকে ২০১৬ সালে ৩০ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে। অর্থাৎ ৬ বছরে ১৮ হাজার টন স্বর্ণের চাহিদা বৃদ্ধি কোণ স্বাভাবিক কারনে হতে পারে না। চীন এবং রাশিয়া কোণ বিশেষ সময় ও অবস্থার পেক্ষিতে ডলারের মজুদ কমিয়ে স্বর্ণের মজুদ বাড়াচ্ছে। তারা ভালো করেই জানে এই ফিয়াট কাগুজে মুদ্রার বিশেষ করে ডলারের দিন শেষ হয়ে আসছে। বর্তমানে অর্থনীতিবিদসহ অনেকে এই বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন এদের মধ্যে অন্যতম হলেন Mike Maloney, Harry S. Dent, Peter Schiff, James Rickards আলোচ্য বিষয়ের উপর মাইক মালোনির অনেক ডকুমেন্টারি রয়েছে ইউটিউবে। আমরা অচিরেই ডলার পতন দেখতে পাবো, প্রথমে একটি সর্ট ডিফ্লেশন যা পরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হাইপার ইনফ্লেশন নিয়ে আসবে এবং ডলারকে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে।
লিখেছেনঃ Kaisar Ahmed
ট্যাগ
|
ইনফ্লেশন, ডিফ্লেশন, চীন রাশিয়া, গোল্ড রিজার্ভ, ডলার রিজার্ভ, রিজার্ভ কারেন্সি, স্বর্ণ মজুদ, আখেরি জামানা, ডলার পতন
|