Sunday, December 10, 2017

Blog Administrator

আমেরিকান ডলার একটি প্রতারণা ও শোষণের হাতিয়ার



ডলারের তো নিজস্ব কোন মূল্য নেই, তাই কিছু কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করে রাখা হয়েছে। এই বানানো কৃত্রিম চাহিদাগুলোর জন্যই ডলারের এত দাম। যেমন -

১. তেল বেচাকেনার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ডলার দিয়ে লেনদেন করা।
২. বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রেও সবাই ডলার চায়। সাপোজ মালেয়শিয়া আর ভারত বৈদেশিক বাণিজ্য করবে। এক্ষেত্রে তারা নিজেদের কারেন্সি দিয়ে লেনদেন করবে না, স্বর্ণ দিয়েও করবে না, ডলার দিয়ে করবে।
৩. কোন কান্ট্রির যত নোট আছে তার বিপরীতে কত স্বর্ণ আছে তা এখন আর কেউ হিসাব করে না। অন্য দেশকে নোট দিলে সে দেশ দেখবে ঐ পরিমাণ ইউএস ডলার আছে কিনা, যাতে নাকি ক্যাশ ইন করে ডলার পাওয়া যায়। একে বলে রিজার্ভ কারেন্সি স্ট্যাটাস।
৪. আমেরিকান ডলার নিয়ে পৃথিবীর যেকোন গ্রামে চলে যাওয়া যায় আর ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশী টাকা মনে হয় ইন্ডিয়াতেও চালানো যাবে না। এটাকে বলে হার্ড কারেন্সী স্ট্যাটাস।
আমেরিকান ডলারের ইত্যাদি এমন আরো অনেক স্ট্যাটাস আছে। তেল তো এমনিতেই বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পণ্য আর এটা ডলার দিয়ে লেনদেন করা বাধ্যতামূলক। তার উপর আমেরিকান ডলারের এমন সব প্রভাবশালী স্ট্যাটাস থাকায় তেল বেচাকেনা ব্যাতীত অন্যান্য লেনদেন ডলার দিয়ে করা বাধ্যতামূলক না হওয়া সত্ত্বেও সবাই ডলার দিয়েই ঐসব লেনদেন করে। ফলে আমেরিকান ডলার মাস্টার স্ট্যাটাস পেয়ে গেছে, স্বর্ণের বিকল্প বলা যায়। আর ডলার যারা ছাপায় তারা মানবজাতির সমস্ত সম্পদ ভ্যাকুম ক্লিনারের মত টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
ডলার দিয়ে লেনদেন না করলে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড হবে অনেকটা বার্টারের মত। বার্টার হল বিনিময় প্রথা। আগামাথা বিহীন। আমার ১০ টা ছাগল আছে, আরেকজনের আছে ৩টা গরু। দুইজনে রাজি হলাম, ডিল। বিনিময় হয়ে গেল। কিন্তু বার্টারের লিমিটেশন আছে। আমার ১০ টা ছাগল আছে কিন্তু গরু তো আমার নাও প্রয়োজন হতে পারে। আবার গরু ছাগলের এই যে লেনদেন করলাম, এটা তো সমান সমান নাও হতে পারে। হতে পারে আমার ১০ টা ছাগলের দামই তিনটা গরুর চেয়ে বেশি ছিল। এক্ষেত্রে সমস্যা সমাধান করবে টাকা। কারণ টাকা হল "মূল্যের পরিমাপক"। টাকা দিয়ে মেপে আমি আমার জিনিসপত্রের দাম বের করে ফেলব, লেনদেন হবে সমান সমান, আর যা ইচ্ছা তাই কিনতে পারব। একইভাবে ১ ভারতীয় রুপি সমান মনে হয় ১.৩ বাংলাদেশী টাকা। এখানে আবার সেই "আগামাথা নাই" সমস্যা। বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন মূল্যের মুদ্রা ছাপাচ্ছে, কারটার কি মূল্য কোন মডারেটর নাই। এক্ষেত্রে ডলার হল মূল্যের পরিমাপক। ডলারের মূল্যের উপর ভিত্তি করে সবার মুদ্রার মান নির্ধারণ করা হয় আর লেনদেন করা হয়। এই কারণে ডলার দিয়ে লেনদেন করতে সবাই বাধ্য হয়ে যায় কেননা ডলারের সাথে সবার মুদ্রার মূল্য লিংকড।

ট্যাগ
আমেরিকান ডলার, ইউএস ডলার, বার্টার, বাংলাদেশী টাকা, ভারতীয় রুপি, বিনিময় প্রথা, আখেরী  জামানা, হার্ড কারেন্সী